নগদ কেলেঙ্কারি: ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রাক্তন টেলি যোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদের ব্যক্তিগত সহকারীর বিরুদ্ধে

 
ছবিঃ ইউটিউব চ্যানেল MANCHITRA 'র সৌজন্যে


সম্প্রতি অনলাইন আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ (Nagad) থেকে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রাক্তন তার ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের ব্যক্তিগত সহকারী আতীক মোর্শেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তিনি এই অভিযোগগুলোকে "মিথ্যা" এবং "ভিত্তিহীন" বলে দাবি করেছেন। এই প্রেক্ষিতে, নগদের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক অনিয়ম নিয়ে একটি ভাবনা।

 

অভিযোগের পটভূমি

নগদ বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে সম্প্রতি ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন আতীক মোর্শেদ। এই অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সিইও তানভীর এ মিশুক এবং ডেপুটি সিইও মুঈদ তাসনিম তাকি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

 

আতীক মোর্শেদের ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া

আতীক মোর্শেদ, যিনি নগদে কোনো আনুষ্ঠানিক পদে না থাকলের প্রতিষ্ঠানটির ষষ্ঠ তলার সদর দপ্তর থেকে প্রতিদিন কাজ করতেন এবং পোস্টাল বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ফয়েজ আহমাদ তায়্যেবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ, তিনি তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের নগদে নিয়োগ দিয়ে স্বজনপ্রীতি করেছেন।

 

আতীক মোর্শেদ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোকে "মিথ্যা" এবং "ভিত্তিহীন" বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, তার ভূমিকা শুধুমাত্র পোস্টাল বিভাগের পক্ষ থেকে সমন্বয় করা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।

 

প্রশাসনিক অনিয়ম ও রাজনৈতিক প্রভাব

নগদে প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সিইও তানভীর এ মিশুক দেশের বাইরে থাকলেও তিনি একটি অভ্যন্তরীণ চক্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা মুছে ফেলা, ভুয়া ইভেন্ট বিল জমা দেওয়া, গণহারে ছাঁটাই এবং নিয়োগ ও পদোন্নতিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দ্য মিরর এশিয়া

ডেপুটি সিইও মুঈদ তাসনিম তাকি ১৮ মে রাতে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি মুক্তি পান। এই মুক্তির পেছনে একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের হস্তক্ষেপ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দ্য মিরর এশিয়া

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান

বাংলাদেশ ব্যাংক নগদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত থাকলেও এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানান, আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারছেন না। তবে তারা আদালতে আবেদন করেছেন এবং গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিয়ে রিপোর্টিং চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেছেন। দ্য মিরর এশিয়াপ্রশ্ন হলো, নগদের ১৫০ কোটি টাকা তাহলে কার পকেটে?

 

 

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক দুর্নীতি বিষয়ক অনুসন্ধানী দল- বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (BFIU) জানিয়েছে, গত দশ মাসে ২৭ হাজার সন্দেহজনক লেন্দেন হয়েছে এবং এই সময়কালে বাংলাদেশ থেকে ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, যা গত বছরে পাচার হওয়া টাকা থেকে ৭৯ শতাংশ বেশি।

 

উপসংহার

নগদ কেলেঙ্কারি শুধু একটি কর্পোরেট দুর্নীতির ঘটনা নয়; এটি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার প্রতিফলন। এই পরিস্থিতি দেশের আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হলে, সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য।

 

মন্তব্য

দেশে সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি প্রবেশ করেছে, যা এ যাবৎকালের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমগুলির টুঁটি চেপে ধরায় সব খবর প্রকাশ্যে আসছে না। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আশায় একটি দুষ্টু চক্রের প্রলোভনে পরে নির্বাচিত সরকার হটাতে আন্দোলনে শরীক হয়েছিলো সাধারণ জনতা। কিন্তু “যে যায় লংকায়, সেই হয় রাবন”! তাহলে জণগনের জন্য কারা?

ভবিষ্যতে হয়তো জনবান্ধব সরকার গঠনের জন্য হয়তো “রোবট”-এর কথা ভাববে জণগন! কারন, রোবট এখনো মিথ্যা বলা শেখেনি!! আপনার মতামত কি, দয়াকরে কমেন্টে জানান?

 




Post a Comment

Previous Post Next Post