ছবিঃ সংগৃহীত |
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভাবিত একটি লেখা ঘুরে বেড়াচ্ছে
ভারতের নামকরা অভিনেতা নানা পাটেকরকে নিয়ে। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া সহ বিভিন্ন সংবাদ
মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে বিষয়টি। বলা হয়েছে, নিজের উপার্জনের
৯০ শতাংশ অর্থই গরীবদের মাঝে দান করে দেন শক্তিমান এই অভিনেতা। এ নিয়ে প্রচার-প্রচারণারও
ধার ধারেন না তিনি!
সাধারণ
জীবনযাপন ও দানশীলতা
নানা পাটেকর—বলিউডের একজন গুণী
অভিনেতা, যিনি শুধু পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও একজন নায়ক। তাঁর দানশীলতা ও
সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড বহু মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
নানা পাটেকর বিলাসবহুল জীবনযাপন থেকে
দূরে থাকেন। তিনি মুম্বাইয়ের একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টে মায়ের সঙ্গে বাস করেন এবং
নিজেই নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি চালান। তিনি প্রায়ই নিজেই বাজারে যান সবজি কিনতে। তাঁর
এই সাধারণ জীবনযাপন ও দানশীলতা সম্পর্কে বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখ রয়েছে।
কৃষকদের
পাশে দাঁড়ানো
মহারাষ্ট্রের খরাপ্রবণ অঞ্চলে কৃষকদের
আত্মহত্যার ঘটনা তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তিনি বিদর্ভ অঞ্চলের ৬২ জন কৃষকের
পরিবারকে ১৫,০০০ রুপি করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়া, লাতুর ও ওসমানাবাদ
জেলার ১১৩টি কৃষক পরিবারের সদস্যদেরও তিনি একই পরিমাণ অর্থ সহায়তা দেন।
নাম ফাউন্ডেশন
২০১৫ সালে নানা পাটেকর ও অভিনেতা
মকরন্দ আনাসপুরে মিলে 'নাম ফাউন্ডেশন' প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থা মহারাষ্ট্রের
খরাপ্রবণ অঞ্চলের কৃষকদের সহায়তায় কাজ করে। তারা জল সংরক্ষণ, কৃষকদের আর্থিক
সহায়তা, এবং বিধবা নারীদের পুনর্বাসনে কাজ করে।
পুরস্কারের ১০ লাখ রুপী সম্পূর্ণটাই দান করে দেন
নানা পাটেকর 'রাজ কাপুর স্পেশাল
কনট্রিবিউশন অ্যাওয়ার্ড' লাভ করেন, যার অর্থমূল্য ছিল ১০ লাখ রুপি। তিনি এই
পুরস্কারের সম্পূর্ণ অর্থ মহারাষ্ট্রের খরাপ্রবণ অঞ্চলের কৃষকদের সহায়তায় দান করে
দেন।
নানা পাটেকরের অল্পবিস্তর পরিচয়
প্রকৃত নাম বিশ্বনাথ পাটেকর। নানা পাটেকর নামেই তিনি বেশি পরিচিত। জন্মঃ ০১ জনুয়ারি ১৯৫১। তিনি একজন ভারতীয় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি প্রধানত হিন্দি ও মারাঠী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৩ সালে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন। নানা পাটেকর ভারতীয় আঞ্চলিক সেনাবাহিনীর একজন অফিসার।
সামরিক জীবন
নানা পাটেকর ১৯৮৮ সালে টেরিটোরিয়াল
আর্মিতে ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগদান করেন। "প্রহার" সিনেমার প্রস্তুতির জন্য
তিনি তিন বছরের প্রশিক্ষণ নেন এবং জেনারেল ভি. কে. সিংয়ের সাথে কাজ করেন, যিনি সে
সময় কর্নেল পদমর্যাদার ছিলেন এবং একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে কার্গিল
যুদ্ধের সময় নানা পাটেকর মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টে দায়িত্ব
পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে টেরিটোরিয়াল আর্মি থেকে
অবসর গ্রহণ করেন।
উপসংহার
নানা পাটেকরের জীবন আমাদের শেখায়,
একজন সত্যিকারের নায়ক শুধু পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও সমাজের পাশে দাঁড়ান। তাঁর
দানশীলতা ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
সূত্রঃ Wikipedia , Economic Times , The Logical Indian
Post a Comment