বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি পাকিস্তানের পুনরাবৃত্তি? ইতিহাসের অন্ধকার আয়নায় এক সতর্কতা
ছবি সংগৃহীত |
১৩০০ ইসরায়েলি নারী ও শিশুর হত্যার পর মিষ্টি বিতরণের উৎসবে মেতে ওঠা অনেকেই
এখন মুখ ঘুরিয়ে বসে আছেন। অথচ বাস্তবতা হলো, হামাসের চেয়েও বেশি ক্ষতি হয়েছে গাজার
সাধারণ মানুষের—নিরীহ নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের। যুদ্ধবিরোধী স্লোগান দিয়ে যাঁরা শুরু
করেছিলেন, তারাই আজ যুদ্ধের দায় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
ইউনুসল্যান্ড: এক ব্যঙ্গচিত্রে পরিণত
হওয়া বাংলাদেশ
এটাই যেন এখনকার রাজনীতির প্রতিচ্ছবি। সারাদিন ভারত-বিরোধী বুলি আওড়ানো, আর রাত হলে ভারতের গোয়েন্দাপ্রধানের দরবারে হাজিরা দেওয়া—এই দ্বিচারিতা আজকের 'ইউনুসল্যান্ড' নামক ছদ্মবাংলার বৈশিষ্ট্য।
পাকিস্তান: পারমাণবিক বোমা আর ভিক্ষার
থালা
বিশ্বে প্রতিনিয়ত পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে খরচ হচ্ছে। প্রতি সেকেন্ডে
বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ টাকা এই যুদ্ধবাজ খেলনার পেছনে উড়ে যাচ্ছে।
পাকিস্তান ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে পারমাণবিক অস্ত্র বানিয়েছে, অথচ তাদের রিজার্ভ
মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার।
আজ পাকিস্তান এক বিলিয়ন ডলারের জন্য বিশ্বব্যাংকের পেছনে ভিক্ষার থালা নিয়ে
ঘুরছে। যদি ওই ৫ বিলিয়ন ডলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য বা প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করা
হতো, তবে পাকিস্তানও হতে পারত এক সম্ভাবনাময় রাষ্ট্র।
ভণ্ড রাজনীতি, পুতুল সরকার ও সামরিক দানবের
অভিশাপ
ভারত দখলের গজওয়া দেখিয়ে সাধারণ মানুষের মগজ ধোলাই করতে করতে পাকিস্তানের
রাজনীতিকরা এক সময় সেনাবাহিনীর পুতুলে পরিণত হয়েছেন। আজ সেই রাক্ষুসে সেনাবাহিনী,
যাদের ৫১% পাঞ্জাবি আর মাত্র ৩% বেলুচ, পাকিস্তানকে একটি বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রে
পরিণত করেছে। অথচ বেলুচিস্তান পাকিস্তানের প্রায় ৪২% এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
এই বৈষম্য থেকেই একদিন গড়ে উঠেছিল স্বাধীন বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে এমন আরেকটি
বিদ্রোহ পাকিস্তানের অভ্যন্তরেই জন্ম নেবে—এ কথা বলাই যায়।
ধ্বংসের অগ্রদূত: সেনাবাহিনী ও পরাশক্তির
ছায়া শাসন
৭৮ বছর ধরে দুধকলায় বড় করে তোলা পাকিস্তান সেনাবাহিনী আজ মার্কিন ও চীনা
স্বার্থে পরিচালিত হয়। যে রাক্ষসকে পাকিস্তান সৃষ্টি করেছে, তা আজ তারই গলা চেপে
ধরেছে। সরকার আসে, সরকার যায়—পুতুল ঘুরে, সুতো ধরে টানে পরাশক্তি।
এভাবেই পাকিস্তান, একটি পারমাণবিক রাষ্ট্র হয়েও অর্থনৈতিকভাবে মেরুদণ্ডহীন
এক 'ভিক্ষুক রাষ্ট্রে' পরিণত হয়েছ।
পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ এশিয়ার অন্য
রাষ্ট্রসমূহ
ভারতের রপ্তানি আয় ৭৭২ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের? মাত্র ২৫ বিলিয়ন। স্বাধীন
হওয়ার ৫৩-৫৪ বছর পর বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখন পাকিস্তানের চেয়ে ১৫ বিলিয়ন ডলার
বেশি। অথচ এই পাকিস্তান ২৩ বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক শোষণ করেছে। আজ
বাংলাদেশের রিজার্ভ পাকিস্তানের পাঁচগুণ।
রাশিয়া, চীন, ভারত—সবাই পারমাণবিক শক্তিধর হয়েও তাদের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত
রেখেছে। পাকিস্তান শুধু হুমকি দিতে জানে: “পারমাণবিক বোমা মারবো!” অথচ সকালবেলায়
চোখ খুলেই দেখে—“লুঙ্গি নাই!”
পাকিস্তানি স্বপ্নে বিভোর ইউনুসল্যান্ড
আজ বাংলাদেশে এমন একটি শ্রেণি জন্ম নিয়েছে, যারা ‘পাকিস্তান হওয়া’র স্বপ্ন
লালন করছে। এরা চায় ধর্মান্ধতা, সামরিকতন্ত্র, দমননীতি আর পরাশক্তির গোলামি। অথচ
একাত্তরের ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ
কখনোই এই পথে হাঁটবে না—এটাই ছিল শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শন।
আজ সেই দৃঢ় নেতৃত্ব অনুপস্থিত। বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী নতুন করে ৩০
লক্ষ মানুষ গরিব হয়ে যাচ্ছে। প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৩ শতাংশ, যা ৩৬ বছরের
মধ্যে সর্বনিম্ন। এই পথে চলতে থাকলে একদিন ইউনুসল্যান্ডও পাকিস্তানের মতো ভিক্ষার
থালা হাতে দাঁড়াবে।
শেষ কথা: পাকিস্তানের ধ্বংস অনিবার্য
পৃথিবীর ৪০ লক্ষ মানুষ হত্যার পাপ মাথায় নিয়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র এক
অভিশপ্ত বাস্তবতা। এই রাষ্ট্রের ধ্বংস শুধু সময়ের ব্যাপার। পারমাণবিক অস্ত্রের
পেছনে কোটি কোটি খরচ করে যারা নিজ দেশের মানুষকে দুমুঠো ভাত দিতে পারে না, তাদের
অবলুপ্তি ইতিহাসের অনিবার্য পরিণতি।
আজ যে বাংলাদেশ কিছু ভুল পথে হাঁটছে, যদি তা না থামানো যায়—তবে ইতিহাস একদিন
হয়তো বলবে: "ইউনুসল্যান্ড—পাকিস্তানের অভিশপ্ত পুনর্জন্ম!"
🙏