শি জিনপিং ও পুতিনের বৈশ্বিক বার্তা: রাশিয়ার বিজয় দিবসে চীন-রাশিয়া সম্পর্কের দৃঢ় প্রকাশ
![]() |
বিজয় দিবসের প্যারেডে শি-পুতিন পাশাপাশি |
বৈশ্বিক মঞ্চে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রকাশ
প্রতি বছর ৯ মে রাশিয়ায় পালিত হয় ‘বিজয় দিবস’—একটি স্মরণীয় দিন, যা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়কে
চিহ্নিত করে। তবে এই দিবস কেবল অতীতের গৌরব উদ্যাপন নয়, বরং বর্তমানের ভূরাজনৈতিক
শক্তির হিসাব-নিকাশেও এক শক্তিশালী বার্তা বহন করে।
২০২৫ সালের বিজয় দিবসের প্যারেডে যখন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাশিয়ার
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে দাঁড়ালেন, তখন পুরো বিশ্ব তা গভীর দৃষ্টিতে
পর্যবেক্ষণ করল। দুই মহাশক্তির এই দৃশ্যমান ঐক্য আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এক নতুন
সমীকরণ সৃষ্টি করলো।
বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া পশ্চিমা
নিষেধাজ্ঞা ও কূটনৈতিক চাপে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চীনের শীর্ষ নেতার সরাসরি
প্যারেডে উপস্থিতি পুতিনের জন্য কেবল বন্ধুত্বের বার্তা নয়, বরং একপ্রকার বৈধতা ও
সমর্থনের প্রতীক।
শি জিনপিংয়ের উপস্থিতি পশ্চিমাদের জন্যও ছিল এক শক্তিশালী সংকেত—চীন
রাশিয়াকে ছাড়ছে না, বরং আরো ঘনিষ্ঠভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছে।
চীন ও রাশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য গত কয়েক বছরে অভূতপূর্ব হারে
বেড়েছে। রাশিয়া এখন চীনের অন্যতম প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী। অন্যদিকে, সামরিক
মহড়া ও কৌশলগত প্রযুক্তি বিনিময় এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
এইসব পদক্ষেপ শুধু অর্থনৈতিক স্বার্থ নয়, বরং পশ্চিমা আধিপত্যের মোকাবিলায়
একটি বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার প্রচেষ্টাও।
শি জিনপিংয়ের প্যারেডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে বার্তাগুলো স্পষ্ট:
- চীন ও রাশিয়া
পারস্পরিক নির্ভরতার সম্পর্ক গড়ে তুলছে
- তারা একসঙ্গে
পশ্চিমা প্রভাবের জবাব দিচ্ছে
- বহুমেরু বিশ্ব
ব্যবস্থার প্রতি তাদের আগ্রহ ও প্রতিশ্রুতি দৃঢ়
এটি এক ধরনের "নতুন ঠান্ডা যুদ্ধ" এর চিত্রও ফুটিয়ে তুলছে—যেখানে
পশ্চিম ও পূর্ব মুখোমুখি।
শি জিনপিংয়ের রাশিয়া সফর ও বিজয় দিবসের প্যারেডে অংশগ্রহণ নিছক সৌজন্য নয়,
এটি একটি কৌশলগত বার্তা। চীন ও রাশিয়ার এই ঐক্য আগামী দিনে বৈশ্বিক রাজনীতিতে
গভীর প্রভাব ফেলবে। পশ্চিমা জোটের জন্য এটি এক সতর্কবার্তা—বিশ্ব আর আগের মতো
একমুখী নয়।