রম্য রচনাঃ "পরীক্ষা"

 

কাল্পনিক ছবি


পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছিল, ‘গব্বর সিং এর চরিত্র চিত্রায়ন করো’।

(প্রশ্ন ভুল ছিল ওটা ভগবৎ সিং হবে কিন্তু সংশোধনী আসতে দেরী হয়)

 



প্ৰশ্ন দেখে সবাই মুখে কলম গুঁজে বসে থাকলেও ঘন্টু লিখতে শুরু করে দিল। উত্তরটা এভাবেই লিখেছিলঃ

 

(১)  সাদা সরল জীবনঃ- মেট্রো সিটি শহরের ভীড় থেকে বহু দূরে এক পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন এই মহান মানুষটি! শুধু মাত্র এক সেট জামা প্যান্ট পরে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিতেন। দাড়ি গোঁফ কামানোর প্রয়োজন অনুভব করতেন না তিনি। দাঁত মেজেও ফালতু পয়সা নষ্ট করতেন না!

 

(২)  সখ সাধঃ- খুবই সামান্য ছিল। একমাত্র খৈনী ছিল তার খুব পছন্দের আইটেম। মাঝে মধ্যে কেউ একটু মদ্ অফার করলে না বলতেন না!

 

(৩)  অনুশাসনময় জীবনঃ- কালিয়া আর তার দলবলকে তাঁর শস্য আদায়ের প্রজেক্ট ইনকমপ্লিট রাখার অপরাধে গুলি করে হত্যা করেছিলেন! কারণ অনুশাসন বজায় রাখা প্রতিটি মানুষের অবশ্য কর্তব্য!

 

(৪)  দয়ালু মনঃ- ঠাকুর সাহেবকে তিনি নিজের কব্জায় নেওয়ার পরেও শুধুমাত্র হাত কেটে ছেড়ে দিয়েছিলেন। তিনি চাইলে তার গলাও কেটে ফেলতে পারতেন!

 

(৫)  নৃত্য সঙ্গীত প্রেমী মনঃ- তাঁর কার্যালয়ে গান বাজনার আসর চলতেই থাকত। উদাহরণঃ

 

(ক)  মেহেবুবা মেহেবুবা।

(খ)   যব তক হে জান, জানে জাঁহা।

(গ)   বাসন্তীকে একবার দেখেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এই মেয়ে নৃত্যাঙ্গনা।

(৬)  রসবোধঃ- কালিয়া আর তার দলবলকে তিনি হাসিয়ে হাসিয়ে মেরেছিলেন! সব সময় হাসতে হাসতে পরপারে যেতে দিতেন শত্রুদের! এছাড়া প্রায়ই তিনি নিজেই হেসে মাটিতে লুটিয়ে পড়তেন। তিনি হলেন এই যুগের লাফিং বুদ্ধ।

 

(৭)  নারীর সম্মানঃ- তিনি নারীদের বেশ সম্মান করতেন! বাসন্তীকে অপহরণ করে তিনি শুধুমাত্র তাঁর দেখার জন্য নৃত্য পরিবেশন করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন- সেটাও দিনের আলোয়! আজকাল আধুনিক ভিলেনরা প্রথমেই যে বিশেষ কাজটা করতে চান, তিনি সেটা করেননি।

 

(৮)  ভিক্ষুক জীবনঃ- তাঁর অনুচররা খাবারের জন্য গ্রামে গিয়ে শুকনো খাবার চাইতেন। কখনও মিষ্টি, পিৎজা, বার্গার, মাটন এসব ডিমান্ড করতেন না!

 

(৯)  ভোলা মনঃ- খুব সম্ভবত বিয়ে না করার জন্য তারিখ সময় এসব মনে রাখা প্রয়োজন মনে করতেন না। নিজের কাজ কর্তব্য নিষ্ঠা সহকারে পালন করতেন।

 

(১০)  সমাজ সেবাঃ- বাচ্চা ছেলেদের ঘুম পাড়ানোর কাজে তাঁর যথেষ্ট নাম-ডাক ছিল।

 

সংশোধনী আসার আগেই ঘন্টু খাতা জমা দিয়ে চলে যায়। ফলাফল বেরুলে দেখা যায়, সে যে শুধু পুরো নম্বর পেয়েছে তাই নয়, তাকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়-এর গর্ব বলে ভূষিত করেন।

 

সংগৃহীত

 





Post a Comment

Previous Post Next Post