প্রথম “বাংলাদেশ–চীন–পাকিস্তান” ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী/পররাষ্ট্র সচিব বৈঠক

কুনমিং, ইউনান প্রদেশ – জুন ১৯–২০, ২০২৫

চীনের কুনমিংয়ে ১৯ জুন চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইদং, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এবং পাকিস্তানের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ ভার্চুয়ালি (ভিডিও কলের মাধ্যমে) প্রথম পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন।

মূল সিদ্ধান্তের সারসংক্ষেপ:

ত্রিপক্ষীয় কাঠামোর উদ্বোধন
প্রথমবারের মতো ত্রিপক্ষীয় সহযোগী কাঠামোর ভিত্তি নির্ধারণ করা হয়, যার অংশ হিসেবে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সামগ্রীগত সহযোগিতা
বাণিজ্য, শিল্প, কৃষি, জলবায়ু, পানিসম্পদ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ডিজিটাল অর্থনীতি, সবুজ অবকাঠামো, ও সমুদ্রবিজ্ঞানসহ ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়।

মূলনীতি ও অভিপ্রায়

· “সুপ্রতিবেশী আচরণ”, “সমতা ও পারস্পরিক বিশ্বাস”, “উন্মুক্ততা ও অন্তর্ভুক্তি”, এবং “উইন-উইন সহযোগিতা” নীতির ওপর ভিত্তি করে কাঠামো পরিচালিত হবে।

· পক্ষগুলোর সদিচ্ছা রয়েছে যে এটি কোনো “তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে” গঠিত হচ্ছে না, বরং একটি “বহুপাক্ষিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক” অঞ্চলিক প্রয়াস। 

চীনের ভূমিকা ও ব্যাখ্যা
সান ওয়েইদং বলেছিলেন, “চীন প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে একটি ভাগাভাগি করা ভবিষ্যৎ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ” এবং বাংলাদেশের ও পাকিস্তানের সাথে “উচ্চ‑মানের বেল্ট অ্যান্ড রোড” সহযোগিতার ‍মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যেতে চায়।

5. রাষ্ট্রদূত আমনার বক্তব্য
পাকিস্তানি পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ সম্মেলনের সূচনা, জনকেন্দ্রিক উন্নয়ন এবং চীন ও দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততার তাগিদ দিয়ে ত্রিপক্ষীয় কাঠামোর জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

এই উদ্যোগ পূর্বেই আফগানিস্তান–পাকিস্তান–চীন কাঠামো হিসেবে দেখা গেছে; এটি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রতি প্রভূত চাপ প্রতিষ্ঠার একটি অংশ বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন।

বিশেষভাবে ভারতের জন্য এটি একটি কৌশলগত সংকেত হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে — “ভারত‑বিরোধী” নয়, যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সেটি না হলেও প্রত্যক্ষ প্রভাব নিয়ে নজর রাখছেন ।

উপসংহার

১৯ জুন কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশ–চীন–পাকিস্তান প্রথমবারের মতো একটি ত্রিপক্ষীয় কাঠামো তৈরি করলো, যার উদ্দেশ্য হলো অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং জনকল্যাণমূলক ক্ষেত্রগুলোতে সমন্বিত সহযোগিতা। যদিও পক্ষগুলো স্পষ্টভাবে জানান যে, এটি কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নয়, তবে এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাইরে একটি নতুন ভূ-রাজনৈতিক ইকোসিস্টেমের সূচনা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।