![]() |
ছবিঃ North East News |
২১ মে ২০২৫ তারিখে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দেন যে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে কোনো ধরনের "মানবিক করিডোর" অনুমোদন করা হবে না। তিনি বলেন, "No bloody corridor business"—এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট করেন যে, এমন কোনো উদ্যোগ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ এবং তা সেনাবাহিনী মেনে নেবে না ।
এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "মানবিক করিডোর" বিষয়টি নিয়ে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না। তবে তিনি পূর্বে এই করিডোরের বিষয়টি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করেছিলেন, যা এখন পরিবর্তিত অবস্থান বলে মনে হচ্ছে ।
উত্তেজনার পেছনের কারণসমূহ
১. নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া
সেনাপ্রধান ওয়াকারউজজামান শুরুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে সমর্থন দিলেও, তিনি এখন দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। অন্যদিকে ড. ইউনুস নির্বাচন ২০২৬ সালের মার্চ-জুন মাসের দিকে আয়োজনের অস্পষ্ট আভাস দিয়েছেন, যা সেনাবাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে ।
২. ইসলামপন্থী নেতাদের মুক্তি
ড. ইউনুসের সরকার ইসলামপন্থী নেতাদের মুক্তি দিয়েছে, যা সেনাবাহিনীর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে দোষী সাব্যস্ত প্রায় ৩০০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যা সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে ।
৩. সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ বিভাজন
ড. ইউনুস সেনাপ্রধানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান (PSO) এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমানকে(QMG) সমর্থন দিচ্ছেন, যারা পাকিস্তানপন্থী হিসেবে পরিচিত।এটি সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে এবং অভ্যন্তরীণ সংকটের সম্ভাবনা বাড়িয়েছে ।
ভবিষ্যতের সম্ভাব্য প্রভাব
সেনাপ্রধানের কড়া অবস্থান এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে বিরোধ বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে। যদি এই বিরোধ অব্যাহত থাকে, তবে তা সামরিক হস্তক্ষেপের দিকে গড়াতে পারে বলে অনেকে আশংকা করছে, যা দেশে গণতন্ত্র পূনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ক্ষতিকর হবে।
উপসংহার
বাংলাদেশ বর্তমানে একটি সংকটময় রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সেনাবাহিনী এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা প্রয়োজন, যাতে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় থাকে এবং স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।
সতর্কীকরণ: এই বিশ্লেষণটি বর্তমান সংবাদ প্রতিবেদন ও তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি। পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তথ্য হালনাগাদ হতে পারে।
সূত্রঃ @Business Today @North East News
إرسال تعليق