"http://www.sitemaps.org/schemas/sitemap/0.9" xmlns:image="http://www.google.com/schemas/sitemap-image/1.1" xmlns:xsi="http://www.w3.org/2001/XMLSchema-instance" xsi:schemaLocation="http://www.sitemaps.org/schemas/sitemap/0.9 http://www.sitemaps.org/schemas/sitemap/0.9/sitemap.xsd"> ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধ: ৬ বছর আগে করা ভবিষ্যদ্বাণী- ২০২৫ কি হবে এক মহা বিপর্যয়ের বছর? - সাত্ত্বিক মহারাজ

Advertise

ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধ: ৬ বছর আগে করা ভবিষ্যদ্বাণী- ২০২৫ কি হবে এক মহা বিপর্যয়ের বছর?

 
ভারতের দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র। ছবিঃ বিবিসি বাংলা

২০২৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি পরমাণু যুদ্ধ শুরু হতে পারে— ২০১৯ সালে এমন এক ভয়াবহ পূর্বাভাস দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এই পরমাণু যুদ্ধ শুরু হতে পারে। যদিও এটি একধরনের কাল্পনিক দৃশ্যকল্প, তবে গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি যুদ্ধ বেধে যায়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণ হারাতে পারেন প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মানুষ। পরবর্তীতেও আরো হতাহতের আশংকা করেছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অ্যালান রোবকের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় বলা হয়, যুদ্ধ শুধু সরাসরি প্রাণহানিই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু বিপর্যয় ও খাদ্য সংকটেরও কারণ হতে পারে। এর ফলে বহু কোটি মানুষ অনাহারে মারা যেতে পারেন।

পাকিস্তানের করাচি শহরে একটি পারমানবিক বোমার নমূনা

গবেষণায় যুদ্ধ লাগার দুইটি সম্ভাব্য কারণের কথা বলা হয়েছে:

  • প্রথমতঃ কোনো সন্ত্রাসী হামলায় ভারতীয় পার্লামেন্টে প্রাণহানি ঘটলে ভারত পাল্টা হামলা চালাবে পাকিস্তানে, যার জবাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে ইসলামাবাদ।
  • দ্বিতীয়তঃ ভারত কাশ্মীরে সামরিক অভিযান শুরু করলে পাকিস্তান প্রতিক্রিয়ায় পারমাণবিক পথ বেছে নিতে পারে।

এই সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে সামরিক বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে ওয়ার্কশপের মাধ্যমে, যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের সাবেক সেনা কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন।

কাল্পনিক চিত্র

“দুর্ঘটনাই বড় আশঙ্কা”

পাকিস্তানের পরমাণু বিজ্ঞানী পারভেজ হুডভাই এবং ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল দীপঙ্কর ব্যানার্জি — উভয়েরই মত, পরিকল্পিত না হলেও ভুল বোঝাবুঝি, সন্ত্রাসী হামলা, পানিবিভাগ বা দুর্ঘটনার কারণে যুদ্ধ বাধতে পারে। বিশেষ করে কাশ্মীর ও পানিবণ্টন-সংক্রান্ত উত্তেজনা উভয় দেশের জন্যই একটি স্থায়ী ঝুঁকি।

যুদ্ধ শুধু সীমান্তে নয়, সারা পৃথিবীতে প্রভাব ফেলবে

গবেষকদের মতে, পারমাণবিক বিস্ফোরণে যে অগ্নিকাণ্ড ও ধোঁয়ার সৃষ্টি হবে তা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হবে। সূর্যালোক কমে গিয়ে পৃথিবী ঠাণ্ডা ও শস্যহীন হয়ে পড়বে। অর্থাৎ যুদ্ধ শেষ হলেও অনাহারে মৃত্যুর ধারা চলতেই থাকবে।

দুই দেশের অস্ত্রের সম্ভার

বর্তমানে (২০১৯) পাকিস্তানের কাছে রয়েছে আনুমানিক ১৬০টি এবং ভারতের কাছে ১৫০টি পরমাণু অস্ত্র। গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪০০–৫০০-তে। উভয় দেশই এখন ডুবোজাহাজ ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে সক্ষম।

এখনো কি সময় আছে?

যদিও ভারত “নো ফার্স্ট ইউজ” নীতি মেনে চলে, দেশটি তা পুনর্বিবেচনার কথাও বলেছে। অপরদিকে পাকিস্তান কখনোই এ ধরনের অঙ্গীকার করেনি। ফলে, কোনো নিশ্চয়তা নেই যে ভবিষ্যতে পারমাণবিক যুদ্ধ ঘটবে না।

অন্য দেশগুলোর ভূমিকা

বিশ্বে বর্তমানে ৯টি দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু ভারতের ও পাকিস্তানের সীমান্তে যে দৈনিক উত্তেজনা বিরাজ করছে, তা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক পারমাণবিক সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি করছে।

এই যুদ্ধ না ঘটুক — সেটাই আমাদের কাম্য। কিন্তু প্রতিরোধে এখনই আন্তর্জাতিক উদ্যোগ এবং আঞ্চলিক সমঝোতা জরুরি।

উপসংহার

পরমাণু অস্ত্র শুধুই প্রতিরক্ষার জন্য, এমন ধারণা যে সব সময় সত্য হয় না, তার প্রমাণ ইতিহাসেই রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই যদি রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল না থাকে, বা নেতারা সংযত না থাকেন, তাহলে ছোট কোনো ঘটনারও বড় পরিণতি হতে পারে। এমন একটি যুদ্ধ কখনও যেন বাস্তব না হয়—এই কামনায়ই আজকের ভাবনা শেষ করি, যদিও ইতোমধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।

০৭ মে ২০২৫




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url