"http://www.sitemaps.org/schemas/sitemap/0.9" xmlns:image="http://www.google.com/schemas/sitemap-image/1.1" xmlns:xsi="http://www.w3.org/2001/XMLSchema-instance" xsi:schemaLocation="http://www.sitemaps.org/schemas/sitemap/0.9 http://www.sitemaps.org/schemas/sitemap/0.9/sitemap.xsd"> ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের অবস্থান - সাত্ত্বিক মহারাজ

Advertise

ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের অবস্থান

 

প্রতীকী ছবি

বিশ্ব রাজনীতির পালাবদলে আজকের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জটিল ও দ্রুত পরিবর্তনশীল। যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, ভারত-চীন উত্তেজনা—সব মিলিয়ে একটি নতুন বিশ্ব বাস্তবতার জন্ম দিচ্ছে। এই পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান ও কৌশলগত ভারসাম্য এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।


বিশ্ব রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনগুলো কী কী?

১. যুক্তরাষ্ট্র বনাম চীন প্রতিযোগিতা
দুই পরাশক্তির মধ্যে প্রভাব বিস্তার নিয়ে চলমান ঠান্ডা যুদ্ধ গোটা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করছে।

২. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
শুধু ইউরোপ নয়, সারা বিশ্বেই এর প্রভাব পড়েছে খাদ্য ও জ্বালানির দামে। এই যুদ্ধ বিশ্বব্যবস্থায় বিভাজন আরও প্রকট করেছে।

৩. মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও শক্তির পুনর্বিন্যাস
ইরান-ইসরায়েল, গাজা পরিস্থিতি এবং সৌদি আরব-চীন ঘনিষ্ঠতা বৈশ্বিক ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন এনেছে।

৪. ভারত-চীন উত্তেজনা ও দক্ষিণ এশিয়ার সামরিকীকরণ
লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষ ও ভারত মহাসাগরে চীনের উপস্থিতি পুরো অঞ্চলকে নতুন নিরাপত্তা বাস্তবতায় ঠেলে দিচ্ছে।


বাংলাদেশ কোথায় দাঁড়িয়ে?

বাংলাদেশের ভূ-অবস্থান এমন এক কৌশলগত জায়গায়, যেখানে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সবাই আগ্রহী। তাই বাংলাদেশের জন্য “ভারসাম্যের কূটনীতি” এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক

সীমান্ত, পানি ও বাণিজ্য নিয়ে সম্পর্ক জটিল হলেও—ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক কারণে ভারত সবসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

ভারত বাংলাদেশের ওপর আঞ্চলিক নিরাপত্তার অংশ হিসেবে গভীর নজর রাখে।

চীনের ভূমিকা

অবকাঠামো উন্নয়ন ও বাণিজ্যে চীনের বড় বিনিয়োগ আছে (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ)।

তবে চীনের ঘনিষ্ঠতা ভারতে সন্দেহের জন্ম দেয়, যা ভারসাম্য রক্ষায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জোট

শ্রম অধিকার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট, যা কখনো কখনো কূটনৈতিক চাপ তৈরি করে।

কিন্তু মার্কিন বাজার বাংলাদেশের রপ্তানির অন্যতম বড় ভরসা।

ভবিষ্যতের করণীয়

১. স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখা
বড় পরাশক্তির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষা করা জরুরি।

২. অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদার করা
বেশি মাত্রায় একক নির্ভরতা না রেখে বহুমুখী বিনিয়োগ ও বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা দরকার।

৩. আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো
BIMSTEC, BBIN, SAARC-এর মতো প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে, যাতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

উপসংহার

ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা বদলে যাচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ—দুই-ই আছে। এই নতুন বাস্তবতায় কৌশলী ও দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের মাধ্যমেই বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও আঞ্চলিক প্রভাব বজায় রাখতে পারবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url