Advertise

দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের ছায়া: ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘর্ষে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ

 

পকিস্তানে ৯টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম গুড়িয়ে দিয়েছে ভারত

গত তিন দিনে দক্ষিণ এশিয়া আবারও এক উত্তপ্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র—ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পুরো অঞ্চলজুড়ে যুদ্ধের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। এই সময়ের মধ্যে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা শুধু সীমান্তে উত্তেজনা নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও এক নতুন অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিয়েছে।

সংঘর্ষের সূচনা

২২ এপ্রিল ২০২৫ সালে, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হন। সন্ত্রাসীরা বেছে বেছে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরকে হত্যা করে। ভারত সরকার সরাসরি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলিকে এই হামলার জন্য দায়ী করে। যদিও পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে, তবুও এটি ছিল সংঘর্ষের মূল প্রেক্ষাপট।

অপারেশন সিঁদূর

৭ মে ভারতীয় সময় রাত আনুমানিক ১টা থেকে দেড়টার দিকে ভারত “অপারেশন সিঁদূর” নামে একটি সামরিক অভিযান চালায়। এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়। ভারতীয় বিমানবাহিনী রাফালে জেট থেকে উন্নত প্রযুক্তির মিসাইল ব্যবহার করে লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

পাকিস্তান দাবি করে যে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে এবং প্রায় ২৫টি ভারতীয় ড্রোন আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় সেগুলোকেও ভূপাতিত করেছে। ভারত অবশ্য এসব দাবি অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা নির্ভুলভাবে শুধু জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত করেছে।

এই সামরিক উত্তেজনার জেরে সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়। উভয় পক্ষ থেকে মর্টার হামলা ও গুলিবর্ষণে পাকিস্তানে ৩১ জন এবং ভারতে ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। সীমান্তবর্তী এলাকায় জনজীবন প্রায় থমকে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই দেশকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন।

উত্তেজনার এই ধারাবাহিকতা যদি অব্যাহত থাকে, তবে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে যাবে এবং একে ঘিরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতি পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে। পরমাণু ভারত এরই মধ্যে উত্তরের ২৪টি বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল স্থগিত করেছে

এই মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো সংযম এবং কূটনৈতিক সংলাপে ফিরে যাওয়া। যেকোনো পরিণতির আগেই উত্তেজনা প্রশমনের বাস্তবিক পদক্ষেপ নেওয়া না হলে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি এক অনিবার্য সংকটে পড়তে পারে।

 

উৎসসমূহ:

1.   The Economic Times

2.   Al Jazeer

3.   Hindustn Times

4.   The Guardian

5.   Reuters

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url