![]() |
ছবিঃ (খামাখা) |
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে
প্রসারিত হয়েছে। উভয় দেশের ভৌগোলিক ঘনিষ্ঠতা, সাংস্কৃতিক মিল এবং আঞ্চলিক
সহযোগিতার আগ্রহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে এক নতুন মাত্রা এনেছে। বিশেষত
১৯৯৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন খাতে ভারতের বিনিয়োগ বাংলাদেশের
অর্থনীতিতে একটি দৃশ্যমান ভূমিকা রেখেছে।
খাতভিত্তিক বিনিয়োগের পরিমাণ
১৯৯৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে
যেসব বিনিয়োগ হয়েছে, তার একটি সারাংশ নিচে তুলে ধরা হলো:
খাত বিনিয়োগের পরিমান
১। ব্যাংকিং ১৭৮
মিলিয়ন ডলার
২। টেক্সটাইল ১২০ “ “
৩। বিদ্যুৎ
৯৫ “ “
৪। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ
১৮ “ “
৫। বাণিজ্য
১৪ “ “
৬। রাসায়নিক ওষুধ
২৯ “ “
৭। চামড়া শিল্প
৩০ “ “
৮। কৃষি ও মৎস সম্পদ
৮০ “ “
৯। নির্মাণ শিল্প
৪০ “ “
১০। বীমা ৯০ “ “
১১। তথ্য প্রযুক্তি, পণ্য পরিবহণ,
মোবাইল, ধাতব শিক্ষা, ধাতব শিল্প,
ভোজ্যতেল, সিমেন্ট, সিমেন্ট,
যন্ত্রপাতি ও মোটর সাইকেল ১৭২ “ “
এই তথ্য থেকে স্পষ্ট যে, ভারতের বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি হয়েছে ব্যাংকিং ও টেক্সটাইল খাতে।বিনিয়োগের প্রভাব ও গুরুত্ব
এই বিনিয়োগগুলো কেবল পুঁজি আনয়ন নয় বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রযুক্তি
স্থানান্তর ও ব্যবসায়িক দক্ষতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ, টেক্সটাইল
খাতে বিনিয়োগে নতুন মেশিনারি, কাঁচামাল ও উৎপাদন দক্ষতা এসেছে, যা বাংলাদেশের
রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। একইভাবে বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ দেশের
জ্বালানি অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়ক হয়েছে।
সাম্প্রতিক সহযোগিতা: ২০২৪-২৫ সালের
অনুদান
ভারত ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও বাংলাদেশকে ১২০ কোটি টাকা সাহায্য বরাদ্দ করেছে। এই
বরাদ্দ উন্নয়ন সহযোগিতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্প ও প্রযুক্তিগত
সহায়তায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক দিনের পর দিন গভীর থেকে
গভীরতর হয়েছে।
উপসংহার
বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ একটি বহুমাত্রিক বাস্তবতা—যা কেবল অর্থনৈতিক নয়,
বরং কৌশলগত ও কূটনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। আগামী দিনে এই বিনিয়োগ আরও বিস্তৃত
হবে বলে আশা করা যায়, বিশেষ করে অবকাঠামো, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব খাতে।
এখানে মনে রাখা জরুরি যে, বিদেশি বিনিয়োগ যেমন সম্ভাবনা তৈরি করে, তেমনি
স্বার্থ রক্ষা ও ন্যায়সঙ্গত অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই
বাংলাদেশকে উচিত হবে একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত কাঠামোর মধ্যে এই ধরনের বিনিয়োগ
ব্যবস্থাপনা করা।
إرسال تعليق