শিশুদের ফল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা: সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন
![]() |
ছবিঃ সংগৃহীত |
শিশুদের বেড়ে ওঠার প্রতিটি ধাপে পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। ফল হচ্ছে
এমন একটি প্রাকৃতিক খাদ্য, যা শিশুর দেহে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। তবে সবকিছুর মতো ফল খাওয়ারও কিছু নিয়ম-কানুন এবং
সীমাবদ্ধতা আছে। চলুন জেনে নিই—শিশুদের জন্য ফল খাওয়া কতটা উপকারী এবং কোথায় রয়েছে
সাবধানতার প্রয়োজন।
শিশুদের ফল খাওয়ার উপকারিতা
১. শরীরের গঠনে সহায়ক
ফল যেমন আপেল, কলা, পেঁপে, আম—এসবের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন A, C,
পটাশিয়াম এবং আঁশ (fiber)। এগুলো শিশুর হাড়, দাঁত ও ত্বকের সঠিক গঠনে সাহায্য করে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ভিটামিন C সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলা, লেবু, মাল্টা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে
শক্তিশালী করে, যা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে।
৩. হজমশক্তি উন্নত করে
ফাইবারসমৃদ্ধ ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে। বিশেষ করে পেঁপে
ও নাশপাতি শিশুর হজমপ্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে কার্যকর।
৪. পানি ঘাটতি পূরণ করে
তরমুজ, খিরসাপাত আম কিংবা লিচুর মতো জলীয় ফল শিশুর শরীরে পানির ভারসাম্য
বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৫. প্রাকৃতিক মিষ্টান্ন হিসেবে বিকল্প
ফলের প্রাকৃতিক চিনি শিশুদের মিষ্টির চাহিদা পূরণ করে, যা ক্যান্ডি বা
চকোলেটের তুলনায় অনেক স্বাস্থ্যকর।
শিশুদের ফল খাওয়ার সম্ভাব্য অপকারিতা
১. অতিরিক্ত ফল খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ
যথেচ্ছ পরিমাণে ফল খাওয়ালে অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ (প্রাকৃতিক চিনি) ও আঁশের
কারণে পেট ব্যথা, গ্যাস বা ডায়রিয়া হতে পারে।
২. অ্যালার্জির আশঙ্কা
কিছু শিশু নির্দিষ্ট ফল যেমন স্ট্রবেরি, আনার বা কিউই খেলে ত্বকে ফুসকুড়ি,
শ্বাসকষ্ট বা চোখে চুলকানির মতো অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
৩. প্রক্রিয়াজাত জুসের ক্ষতি
বাজারে বিক্রি হওয়া প্যাকেটজাত জুসে অতিরিক্ত চিনি ও প্রিজারভেটিভ থাকে, যা
দাঁতের ক্ষয় এবং ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।
৪. অপরিষ্কার ফল থেকে সংক্রমণ
সঠিকভাবে না ধোয়া ফলের গায়ে কীটনাশক বা ব্যাকটেরিয়া থাকলে শিশুর জ্বর, বমি
বা ডায়রিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
কীভাবে শিশুদের ফল খাওয়াবেন: কিছু
কার্যকর পরামর্শ
- ফল খাওয়ানোর আগে
ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- মৌসুমি ও
স্থানীয় ফল বেছে নিন—সেগুলো তাজা ও পুষ্টিসমৃদ্ধ হয়।
- একসঙ্গে অনেক ফল
না দিয়ে প্রতিদিন ১-২ রকম ফল দিন।
- শিশুকে কাঁচা ফল
খাওয়াতে উদ্বুদ্ধ করুন, জুস নয়।
- ৬ মাস বয়সের পর
থেকে ধীরে ধীরে ফল পরিচিত করানো যেতে পারে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী।
ফল শিশুর সুস্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে
ফল খাওয়াতে হবে পরিমিতভাবে এবং সচেতনতার সঙ্গে। সঠিকভাবে নির্বাচন, পরিষ্কার ও
পরিবেশন করলে ফল হতে পারে শিশুর জন্য সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান।
#শিশুরপুষ্টি #ফলখাওয়া #স্বাস্থ্যকরখাদ্য #শিশুরসুস্থতা