"ভয়ংকর হাদিস"

 
ছবিঃ প্রতীকী

আসসালামু আলাইকুম! আজ আলোচনা করবো “সহীহ বুখারী শরীফের” একটি ভয়ংকর হাদিস সম্পর্কে, যা আমাদের সমাজে ধর্মচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুল ভেঙে দিতে পারে। এই ধরণের হাদিসগুলো পর্যালোচনা করলে ইসলামের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানতে আমাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে পারে, যা সঠিকভাবে ধর্মচর্চার সহায়ক হতে পারে।

 

সহীহ বুখারী

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ হাদিস নং ৬৯৪১

আন্তর্জাতিক নং ৭৪৪৯

হাদিসের মানঃ সহীহ

(পূণঃনিরীক্ষিত)

 

কিভাবে এই ধরণের হাদিসগুলো আমাদের দৈনন্দিন ধর্মচর্চায় প্রভাব ফেলতে পারে তা লেখাটি পড়লেই অনুমান করতে পারবেন। প্রথমে ইয়াসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত পূর্ণ হাদিসটি এখানে তুলে ধরছিঃ


 

“পরিচ্ছেদঃ ৩১২৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়নদের নিকটবর্তী (৭: ৫৬)”

 

হাদিসঃ ৬৯৪১

“উবায়দুল্লাহ ইবনু সাদ ইবনু ইবরাহিম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়টি স্বীয় প্রতিপালকের কাছে অভিযোগ করল। জান্নাত বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার ব্যাপারটি কি হলো যে তাতে শুধু নিঃস্ব ও নিম্ন শ্রেনীর লোকেরাই প্রবেশ করবে। এদিকে জাহান্নামও অভিযোগ করল অর্থাৎ আপনি শুধুমাত্র অহংকারীদেরকেই আমাতে প্রাধান্য দিলেন।

 

আল্লাহ জান্নাতকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি আমার রহমত। জাহান্নামকে বললেনঃ তুমি আমার আযাব। আমি যাকে চাইব, তোমাকে দিয়ে শাস্তি পৌছাব। তোমাদের উভয়কেই পূর্ণ করা হবে। তবে আল্লাহ তাআলা তার সৃষ্টির কারো উপর যুলম করবেন না। তিনি জাহান্নামের জন্য নিজ ইচ্ছানুযায়ী নতুন সৃষ্টি পয়দা করবেন। তাদেরকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন জাহান্নাম বলবে, আরো অতিরিক্ত আছে কি? জাহান্নামে আরো নিক্ষেপ করা হবে, তখনো বলবে, আরো অতিরিক্ত আছে কি? এভাবে তিনবার বলবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা তাঁর কদম (পা) জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দিলে তা পরিপূর্ন হয়ে যাবে। তখন জাহান্নামের একটি অংশ আরেকটি অংশকে এই উত্তর করবে যথেষ্ট হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে ষথেষ্ট হয়েছে।”

 

লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, হাদিসটিতে যে বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়েছে তা পবিত্র কোরআনের ৫০ নং সুরা অর্থাৎ সুরা ক্বাফ এর ৩০ নং আয়াতের বিশ্লেষণ। কিন্তু তাতে যে অতিরিক্ত কথা যোগ করা হয়েছে সেটাই আজকের আলোচ্য বিষয়। সম্মানিত পাঠকদের সুবিধার্থে আয়াতটি নিচে উল্লেখ করছিঃ

 

“সেই দিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করবঃ তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? জাহান্নাম বলবেঃ আরও আছে কি?”-(৫০:৩০)।

 

সুরাটিতে কাফেরদের কৃতকর্মের বর্ণনা দিয়ে ঠিক এর আগের আয়াতে আল্লাহ বলেছেনঃ

 

“আমার কথার রদ বদল হয়না এবং আমি আমার বান্দাদের প্রতি কোন অবিচার করিনা-(৫০:২৯)।”

 

এরপর  তার প্রতিফল বা প্রায়শ্চিত্ত কি হবে তা ৩০ নং আয়াতে বলে দিয়েছেন। এর পরবর্তী আয়াত অর্থাৎ ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ বিশ্বাসী বা ধর্মভীরুদের পুরস্কার সম্পর্কে বলেছেনঃ

 

“আর জান্নাতকে মুত্তাকীদের নিকটস্থ করা হবে - কোন দূরত্ব থাকবেনা-(৫০:৩১)।”

 

কিন্তু লক্ষ্যনীয় যে, আলোচিত হাদিসটিতে আল্লাহর কথার অতিরিক্ত কথা যোগ করা হয়েছে, যা কোরআনের আয়াতের সাথে অতিরিক্ত কথা যোগ করার সামিল। উপরন্তু হাদিসটি পড়লে গা শিঊরে ওঠে যে, ‘আল্লাহর তার নিজের পা জাহান্নামে ঢুকিয়ে দেবেন(নাউজুবিল্লাহ)!। আর এই জঘণ্য কথাটি আছে বুখারী শরীফের হাদিসে! অথচ স্বয়ং নবীজিকে ইংগিত করে পবিত্র কোরআনের ৬৯ নং সুরা আল-হাক্‌ক্কাহ-তে আল্লাহ বলেছেনঃ

 

“ইহা জগতসমূহের রবের নিকট হতে অবতীর্ণ। সে যদি আমার নামে কিছু রচনা করে চালাতে চেষ্টা করত – আমি অবশ্যই তার ডান হাত ধরে ফেলতাম। এবং কেটে দিতাম তার জীবন-ধমনী। অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেহ নেই যে, তাকে রক্ষা করতে পারবে।”-(আয়াত ৪৩-৪৭)।”

 

যেখানে স্বয়ং নবীজিকে ইংগিত করে আল্লাহ এমন কঠোর বাণী পাঠিয়েছেন, সেখানে ইমাম বুখারী সাহেব ‘আবু হুরায়রা(রঃ)’র বরাত দিয়ে কোরআনের আয়াতের সাথে অতিরিক্ত কথা যোগ করেছেন, আর আমাদের দেশের ওয়ায়েজিন সাহেবরা বেশ জোশের সাথে শ্রোতাদেরকে শুনিয়ে ফ্যান ফলোয়ার বাড়াচ্ছেন! কি ভয়ংকর!!

 

আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন। সঠিকটা বোঝার তৌফিক দিন। আমীন।

 

#ইসলাম #হাদীস #ভয়ংকরহাদীস #ইসলামিকজ্ঞান #দ্বীন


Post a Comment

أحدث أقدم