https://www.bruchlee.com/sitemap.xml জুমার খুতবা প্রসংগে - সাত্ত্বিক মহারাজ https://www.bruchlee.com' rel='canonical'

জুমার খুতবা প্রসংগে

 
ছবিঃ প্রতীকী


 

ওয়াজ বাংলায় করা গেলে খুতবা বাংলায় দেয়া যাবে না কেনো?

 

আমাদের দেশের মসজিদগুলোতে জুমার দিন যে খুতবা শোনানো হয়, যদিও তা হাজার বছর আগের, তবুও তাতে অনেক উপদেশমূলক, সমাজ সচেতনমূলক কথা আছে। কিন্তু মুসল্লিরা বুঝা তো দূরের কথা, যিনি শোনান তিনি বা তাদের কয়জনই বা তার অর্থ বোঝেন? কারণ, অধিকাংশ খুতবাদাতাই বেতনভুক্ত। চাকরি ঠিক রাখতে সপ্তাহে একবার এসে হরহর করে মন্ত্রপাঠের মতো- কেউ দেখে, কেউ মুখস্ত বলে শুনিয়ে যান। তার আগে যে ঘন্টাদেড়েক বক্তব্য রাখেন তা কিছু হাদিসের উদ্ধৃতি দিলেও বেশিরভাগই কথাই থাকে নিজস্ব মনগড়া।

 

ওয়াজ নসিহত করার সময় যদি নিজস্ব ভাষায় বলা যায়, খুতবা কেনো দেয়া যাবে না? ওয়াজে তো হাদিস আরবীতে বলার পর তা বাংলায় তরজমা করেই শোনানো হয়। তেমনি খুতবা আরবীতে পাঠ করার পর সবার বোঝার জন্য তার বাংলা অর্থ শোনালে সবাই বুঝতো এবং তাতে সমাজের উপকার হতো।

 

এ প্রসংগে পবিত্র কোরআনের কয়েকটি আয়াত উল্লেখ করা যেতে পারেঃ             

 

সুরা বাকারা আয়াত-১২১

"আমি যাদেরকে যে ধর্মগ্রন্থ দিয়েছি তা যারা সঠিকভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী-(২:১২১)”।

 

সুরা ইউসুফ আয়াত-২

"আমি অবতীর্ণ করেছি আরবী ভাষায় কোরআন যাতে তোমরা বুঝতে পারো-(১২:২)”।

 

সুরা ইব্রাহীম আয়াত-৪

"আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি তাদের নিকট পরিস্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য-(১৪:৪)”।

 

সুরা রুম আয়াত-২২

"এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে-(৩০:২২)”।

 

উপরোক্ত আয়াতসমূহ প্রমাণ করে, কোরআন বুঝে পড়তে হবে। এবং বুঝতে হলে অবশ্যই নিজের ভাষায় বুঝতে হবে।

 

সুরা রুম’এর উল্লেখিত আয়াত অনুযায়ী পৃথিবীতে বহু বর্ণ, বহু ভাষাভাষী মানুষ আছে। সুরা ইব্রাহীম’এর উল্লেখিত আয়াত অনুযায়ী আমাদের ভাষায় কোনো নবী যেহেতু আসেনি বা আমরা যেহেতু আরবী ভাষাভাষী রাসুল(সাঃ) ও তাঁর প্রতি অবতীর্ণ ধর্মগ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন অনুসরণ করি, সেক্ষেত্রে সুরা বাকারা’এর উল্লেখিত আয়াত অনুযায়ী আমরা ‘সঠিকভাবে সত্য বুঝে পাঠ করা’ এবং তদানুযায়ী আল্লাহর বিধিনিষেধগুলো মেনে ধর্ম পালন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

 

মওলানা সাহেবদের কাছে শুনে শুনে ধর্ম পালন করা আর নিজে বুঝে পালন করার মধ্যে অনেক তফাৎ। কারণ, শোনা কথা এক মুখ থেকে আরেক মুখে গেলে তা বিকৃত হয় রটা সবাই জানি।

 

আমাদের পূর্ববর্তী নবীদের ভাষা আরবী ছিলো না। অথচ কোরআনে তাদের কথা ও কার্যাবলী আরবীতেই বর্ণনা করা হয়েছে, তাঁদের ভাষায় নয়।

 

হয়তো বলবেন আরবী ভাষা শিখতে হবে। একটা ভিন্ন ভাষা পড়া, লেখা এবং তার অর্থ বুঝে শেখা চরটিখানি কথা নয়। কয়জন মওলানা মুখস্থ হাদীস ছাড়া নিজ থেকে আরবী ভাষায় ওয়াজ করতে পারেন?

 

আলেম(জ্ঞানী) সমাজ ও সমাজের জ্ঞানী(আলেম)-গুণী এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উচিৎ কোরআন-হাদিসের আলোকে এর একটা বিধিসম্মত সঠিক ও গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করা।





Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url