![]() |
ছবিঃ নর্থইষ্ট নিউজের সৌজন্যে |
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (NCP) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডাঃ তাসনিম জারা-র সাম্প্রতিক এক বৈঠক। গত ২০ আগস্ট ২০২৫, নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুর বিলাসবহুল মারিয়ট বোনভয় হোটেলে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এরিক মেয়ার-এর সঙ্গে প্রাতঃরাশে মিলিত হন। এই সাক্ষাৎ প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী হয় এবং সূত্র মতে বৈঠকটি ছিল মূলত গোপন প্রকৃতির।
কারা ছিলেন বৈঠকে?
এরিক
মেয়ার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তা, যিনি দক্ষিণ ও
কেন্দ্রীয় এশিয়া অঞ্চল তত্ত্বাবধান করেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ
পুরো অঞ্চলের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয় তাঁর দায়িত্বে পড়ে। অন্যদিকে, ডাঃ তাসনিম
জারা বাংলাদেশের এক উদীয়মান রাজনৈতিক নেতৃত্ব, যিনি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মহলে
নিজের অবস্থান জোরদার করার চেষ্টা করছেন।
উল্লেখ্য,
১৭ আগস্ট তাসনিম জারা ঢাকা থেকে কাঠমুন্ডু যান। একই বিমানে (বিমান বাংলাদেশ ফ্লাইট
BG-371) কাঠমুন্ডু যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী
এবং চট্টগ্রাম হিল ট্রাক্টস মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা । তাঁদের
সফরের উদ্দেশ্য ছিল ‘Impacts of Climate Change, Disaster Risks and the Role
of Parliamentarians’ শীর্ষক একটি অধিবেশনে অংশ নেয়া।
বৈঠকের সম্ভাব্য আলোচ্য বিষয়
যদিও
প্রাতঃরাশ বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি, তবু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের
মতে—
- বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয়
নির্বাচন (সম্ভাব্য ফেব্রুয়ারি ২০২৬) নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা প্রবল।
- নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ নিয়ে মতবিনিময় হয়ে থাকতে পারে।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা
নীতি ও গণতন্ত্র রক্ষা বিষয়ক অবস্থানও আলোচনায় আসা স্বাভাবিক।
- তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে তাসনিম
জারার ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়েও ওয়াশিংটনের আগ্রহ থাকতে
পারে।
সময়ের গুরুত্ব
বাংলাদেশে
রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে অনিশ্চিত। প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুস ইঙ্গিত
দিয়েছেন যে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে, তবে রাজনৈতিক
দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা ও প্রস্তুতি এখনও অনির্দিষ্ট। ঠিক এই সময়ে একটি মার্কিন
কূটনীতিকের সঙ্গে তাসনিম জারার বৈঠককে কূটনৈতিকভাবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ
হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আঞ্চলিক প্রভাব
এই বৈঠক
শুধু বাংলাদেশ নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও তাৎপর্য বহন করে।
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা
নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের
সম্পর্ক এবং চীনকে ঘিরে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময় তাসনিম জারার মতো তরুণ
নেতৃত্বের সঙ্গে মার্কিন কূটনীতিকের যোগাযোগকে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ হিসেবে দেখা
যেতে পারে।
উপসংহার
কা এই
প্রাতঃরাশ বৈঠক নিছক কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতিকে ঘিরে
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক ধরনের বার্তা ও কৌশলগত অঙ্গীকারের ইঙ্গিত। তরুণ
নেতৃত্বকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দৃশ্যপটে
নতুন সমীকরণ গড়ে তুলতে চাইছে। আর তাসনিম জারার জন্য এটি নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক
মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করার একটি বড় সুযোগ।
তবে ধারণা
করা হয়ে থাকে যে জাতীয় নাগরিক পার্টির অধিকাংশ নেতা ইংরেজি ভাষায় অদক্ষ বিধায় পড়াশুনার
জন্য দীর্ঘদিন ইউরোপে বসবাস করায় এবং ইংরেজি ভাষার উপর দখল থাকায় জারাকেই বিদেশিদের
সাথে বৈঠকের জন্য বেছে নেয় নতুন আত্মপ্রকাশকারী দলটি।
সূত্রঃ NORTHEAST NEWS
إرسال تعليق