ভ্লাদিমির পুতিন
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে পুতিনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কেন রাশিয়া ইরানকে সাহায্য করছে না। পুতিনের জবাব কী ছিল, এবং তার কূটনৈতিক তাৎপর্য—জানুন এই প্রতিবেদনে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—রাশিয়া কেন ইরানকে সরাসরি সামরিকভাবে সাহায্য করছে না, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে এবং ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। এই প্রশ্ন সরাসরি করা হয়েছিল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। তাঁর জবাব ছিল সংযত, কিন্তু তাতে লুকিয়ে ছিল কূটনৈতিক বার্তা।
প্রশ্ন: কেন রাশিয়া ইরানকে সাহায্য করছে না?
এক সংবাদ সম্মেলনে একজন বিদেশি সাংবাদিক পুতিনকে জিজ্ঞেস করেন,
“ইরান হচ্ছে আপনার কৌশলগত মিত্র। তাহলে ইসরায়েলের আক্রমণের মুখে পড়েও আপনি তাদের জন্য কিছু করছেন না কেন?”
পুতিনের সংযত জবাব:
পুতিন প্রথমেই বলেন,
"রাশিয়া এমন কোনও পদক্ষেপ নেবে না যা গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে দেবে।"
তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, রাশিয়া এমন একটি রাষ্ট্র যা যুদ্ধ নয় বরং কূটনৈতিক সমাধানে বিশ্বাস রাখে। পুতিন বলেন,
“ইরান আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং আমরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু আমরা যে কোনও উত্তেজনা কূটনীতির মাধ্যমে প্রশমিত করতে চাই।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“যদি কেউ আশা করে রাশিয়া সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ করবে, সেটি আমাদের নীতির পরিপন্থী।”
ব্যাখ্যা: পুতিন আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
পুতিনের বক্তব্য সরাসরি হলেও এর মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু ভেতরের বার্তা—
-
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জোটের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চায় না রাশিয়া।
বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধেই তারা জড়িত, তাই আরেকটি ফ্রন্ট খুলতে চায় না। -
ইরানকে অস্ত্র, প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সহায়তা পরোক্ষভাবে দেওয়া হচ্ছে বলে ধারণা করা হয়।
যেমন—ড্রোন প্রযুক্তিতে সহযোগিতা, রাডার শেয়ারিং ইত্যাদি। -
রাশিয়া আন্তর্জাতিক মিত্রদের কাছে নিজের অবস্থান ব্যালান্সড রাখতে চায়।
যেমন—আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, ভারত বা চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংযোগ—এসব ক্ষতিগ্রস্ত হোক পুতিন চান না।
এই জবাবের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
পুতিনের এই মন্তব্যের পর ন্যাটো দেশগুলো সন্তোষ প্রকাশ করেছে যে রাশিয়া অন্তত এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্য সংঘর্ষে সরাসরি জড়াচ্ছে না। অপরদিকে, ইরানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠী মনে করছে, রাশিয়া এই মুহূর্তে রাজনৈতিক সমর্থন দিলেও সামরিক সহযোগিতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে।
---
পুতিন সরাসরি সামরিক সহায়তার বিষয়ে মুখ খুলেননি, তবে তাঁর বক্তব্য কৌশলগতভাবে পরিষ্কার—রাশিয়া চায় ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ না হোক এবং রাশিয়া নিজে নতুন কোনও যুদ্ধফ্রন্টে না জড়াক। তবে কূটনীতির আড়ালে যে রাশিয়া ইরানকে নানা মাধ্যমে সাহায্য করে চলেছে, তাতে সন্দেহ নেই।
إرسال تعليق