![]() |
প্রতীকী ছবি |
একটি প্রশ্ন—বিষয়টি কি আজও প্রাসঙ্গিক?
মিশরের ইতিহাসে এমন কিছু বিচারিক মুহূর্ত রয়েছে, যা কেবল একজন আসামির নয়, পুরো সমাজের মানসিকতার প্রতিফলন ঘটায়।
রাষ্ট্রপতি আনোয়ার সাদাতকে হত্যার দায়ে অভিযুক্তকে বিচারক প্রশ্ন করেছিলেন:
— “তুমি তাকে হত্যা করলে কেন?”
আসামির জবাব:
— “কারণ সে সেক্যুলার ছিল।”
বিচারক ফের প্রশ্ন করলেন:
— “তুমি জানো, সেক্যুলার মানে কী?”
উত্তর এল:
— “না, আমি জানি না।”
নোবেলজয়ী সাহিত্যিক নাগিব মাহফুজের ওপর ছুরি হামলা চালানো এক তরুণকে জিজ্ঞেস করা হয়:
— “তুমি তাকে আঘাত করলে কেন?”
উত্তর:
— “সে ধর্মবিরোধী ‘চিলড্রেন অভ গেবালাবি’ লিখেছে।”
বিচারকের কৌতূহল:
— “তুমি উপন্যাসটি পড়েছো?”
আসামি বলল:
— “না।”
লেখক ফারাজ ফাউদার হত্যাকাণ্ডেও একই দৃশ্যপট। খুনিকে প্রশ্ন করা হয়:
— “তাকে কেন হত্যা করলে?”
উত্তর আসে:
— “কারণ তার ঈমান ছিল না।”
— “তুমি কীভাবে জানলে?”
— “তার লেখা পড়ে বোঝা যায়।”
— “কোন বইটি পড়েছো?”
— “কোনোটাই না। আমি লেখাপড়া জানি না।”
এইসব সংলাপ শুধু আদালতের রেকর্ড নয়—এগুলি আমাদের সমাজের এক গভীরতর ব্যর্থতার দলিল।
ঘৃণা জন্ম নেয় না প্রশ্ন, চিন্তা বা পাঠের মধ্য দিয়ে। ঘৃণা জন্ম নেয় অন্ধতা, অজ্ঞতা ও প্ররোচিত ভ্রান্ত বিশ্বাসের ভেতর দিয়ে।
আমরা যখন সমাজে শিক্ষা, যুক্তিবোধ আর সহনশীলতার চর্চা ভুলে যাই, তখন ঘৃণার ধারালো ছুরি আমাদেরই গলায় এসে বসে।
অজ্ঞতার খেসারত সবসময় সমাজকে একত্রে দিতে হয়—তাকে আর ব্যক্তিগত বিষয় বলে এড়ানোর সুযোগ থাকে না।
إرسال تعليق