বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশঃ স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে

এই প্রবন্ধের লেখক প্রণব রায় 


বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কৌশলগত জয়- পরাজয় লাভের প্রতিযোগী ধূর্ত খেলোয়াড়দের খেলার মাঠে রূপান্তরিত হয়েছে! জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাঁর পিতার মতোই সব কুলকে রক্ষা করে যতটুকু পারা যায় (ভারতসহ) বাংলাদেশের স্বার্থ বজায় রেখে দেশ শাসন করে যাচ্ছিলেন। যেমন; ২০১৩ সালে ভারতের সাথে সীমান্ত চুক্তি করে প্রায় ষোল হাজার বর্গমাইল ছিটমহল উদ্ধার, আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে বিশাল সমুদ্র সীমা মায়ানমার ও ভারত থেকে জয় করে নিয়ে এসেছিলো। চীন থেকে ভারতের মতের বিরুদ্ধে গিয়েও নৌবাহিনীর জন্য ডুবু জাহাজ ক্রয়, সেই সাথে আমেরিকাকে কোন অবস্থায়ই সেন্টমার্টিন দ্বীপ লিজ দেয় নাই, যা দিলে তিনি আরও ক্ষমতায় নিঃসংকোচে থাকতে পারতেন।

ভারত  আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট করছে তাদের নিজেদের স্বর্থেই। কারন, জানে অন্য দল ক্ষমতায় আসলে ভারতকে ল্যাংটা হয়ে সব দিয়ে দিবে। কিন্তু সাথে সাথে চরম উগ্র জঙ্গী শক্তির উত্থান ঘটবে যা ভারতের সার্বভৌমত্বের ও তাদের সেভেন সিষ্টার্স এর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে!

আজ আপনাদের সাথে বহু পূর্বের একটি ঘটনার আমার নিজের দেখা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে ৩ রা মার্চ থেকে ২০শে মার্চের মধ্যে বংগবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়িতে তদানীন্তন পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বোষ্টার এসে সাক্ষাত করে তিনি ক্ষমতায় আসলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইজারা দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। বিনিময়ে আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। ঐ দিনক্ষণ আমি বংগবন্ধুর বাড়ির বারান্দায় অন্যান্য ছাত্রনেতাদের সাথে বসা ছিলাম। আধাঘণ্টার উপরে মিটিং করে চলে যাওয়ার পর বংগবন্ধু বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকটা উষ্মা প্রকাশ করে বলেছিলেন, "এই বদমাইশটা আমার নিকট সেন্টমার্টিন দ্বীপ লিজ চায়, আমি স্ট্রেইট না করে দিয়েছি"।

ঐ সময় ঐখানে উপস্থিত ছিলেন সিরাজুল আলম খান, শাজাহান সিরাজ, নূরে আলম সিদ্দিকী, আসম রব, আব্দুল কুদ্দুস মাখন, চট্টগ্রামের তুখোড় ছাত্রনেতা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ স্বপন চৌধুরী প্রমুখ! 

তারই ধারাবাহিকতায় বংগবন্ধুর কন্যার ভেতরও একই শোণিত প্রবাহিত! কাজেই ভারতসহ কোনো দেশের উপরই বংগবন্ধুর সৈনিকদের ও আওয়ামীলীগের কোটি কোটি কর্মীদের পুরোপুরি ভরসা করা যাবেনা। নিজেদের আন্দোলন ও সংগ্রাম করার শক্তিতেই এগিয়ে যেতে হবে! তবে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর তাদের নিজস্ব কৌশলগত স্বার্থেই যদি আমাদের পক্ষে থাকে তবে সেটা আমাদের বাড়তি শক্তি জোগাবে!

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।।


লিখেছেনঃ প্রণব রায়


Post a Comment

أحدث أقدم