![]() |
ছবিঃ Archaeology News Online Magazine |
প্রায় ৬,০০০ বছর আগে দক্ষিণ মোরাভিয়ার ক্রুমলোভ বন এলাকায় প্রাপ্ত "পিট ৪" নামক প্রাচীন খনিজ খননের সময় গর্তের মধ্যে দুই বোনের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। তারা একে অপরের উপর পড়ে মাটিতে শুয়ে ছিল। বড় বোনটি তার বুকে নবজাতক একটি শিশুকে আলিঙ্গন করেছিল এবং পাশে একটি ছোট কুকুরের আংশিক কঙ্কালও ছিল।
ধাতুপুঞ্জ
নির্ধারণ, জিন বিশ্লেষণ ও হাড় যাচাইয়ের মাধ্যমে জানা যায়: উভয় বোন প্রায় ৩০–৪০ বছর
বয়সের, যাদের উচ্চতা ছিল প্রায় ১.৪৬–১.৪৮ মিটার এবং ধারণা করা হয় তারা শৈশবে অপুষ্টির কারণে দুর্বল ও
ক্লান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করেছিল। তবে পরবর্তী জীবনে তারা প্রচণ্ড মাংসহীন খাদ্য
পুষ্টির পরিবর্তে প্রচুর মাংস ভক্ষণ করত—যা ওই এলাকার রহস্য হিসাবে বিবেচিত হয়।
তাদের
কঙ্কালে হাড় ঘষে পড়া (worn vertebrae), প্রারম্ভিক আর্থ্রাইটিস, হার্নিয়েটেড
ডিস্ক, এবং অংশত সেরে ওঠা হাড় ভাঙন দেখা গেছে—যা পরিশ্রমী খনির কাজে
জড়িয়ে থাকার শারীরিক প্রমাণ বহন করে।
জিন
বিশ্লেষণ নিশ্চিত করেছে তারা সহোদর বোন (sisters)। আবার তাদের মুখের রঙ-বর্ণের
ভিত্তিতে অনুভূত হয়– ছোট বোনের ডানচোখ বা সবুজ-বাদামী চোখ এবং গাঢ় চুল ছিল, আর বড়
বোনের সম্ভবত নীলচে চোখ ও ব্লন্ড চুল ছিল। এই তথ্যগুলো ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে
অত্যন্ত বাস্তবসম্মত মুখ–প্লাস্টার, সিলিকন, প্রোথেটিক চোখ ও মগের চুল ব্যবহার
করে—যা বর্তমানে মোরাভিয়ান মিউজিয়ামে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
তাদের শারীরিক পরিস্থিতি, ভেজাল সহকর্মের মতো কাজে জড়িত হওয়ার ইঙ্গিত এবং গর্ভেই মৃত
নবজাত শিশুর পরিচয় ও কুকুরের উপস্থিতি থেকে গবেষকরা অনুমান করছেন—এটি কোনো খাদ্য
বা উৎপাদন হিসেবেই নয় বরং যৌবন, উপাসনা কিংবা আত্মিক শান্তির উদ্দেশ্যে কিছু
ধরনের আধ্যাত্মিক বা বলিদানমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল এমন হতে পারে।
লেখক ও
গবেষকরা পর্যালোচনা করেছেন যে, নৃ‑সমাজে যেমন সমাজতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে ওঠে,
তখন–দেখলে কঠিন ও ক্লান্তিকর শ্রম করা হতো সর্বদা শক্ত বা শ্রেষ্ঠদক্ষ মানুষের
দ্বারা নয়, বরং তাদের দ্বারা যাদের সমাজবাদের কারণে বাধ্য করা যেত—যেমন নারী,
প্রবীণ বা নিম্নবর্গীয় ব্যক্তিরা।
মন্তব্য
এই গবেষণা
প্রাক-Neolithic যুগের শ্রমভিত্তিক সামাজিক কাঠামো, আত্মীয়তাবাদ, আধ্যাত্মিক
বিশ্বাস এবং কঠোর শারীরিক পরিশ্রমে দুর্বল সমাজস্তূপের অপব্যবহার নিয়ে
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। উভয় বোনের মুখমণ্ডল পুনরুদ্ধার (facial
reconstructions) শুধুমাত্র তাদের ব্যক্তিত্বকে জীবন্ত করেনি, একই সঙ্গে
মানব-অবহেলার ইতিহাসকে সামনে এনেছে।
Ref: Archaeology News Online Magazine
إرسال تعليق